রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
নিউজিল্যান্ডের পর এবার ইচ্ছামৃত্যুর বৈধতা দিতে যাচ্ছে ইউরোপের দেশ স্পেন। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে।
আগামী বছরের গোড়ার দিকে বিলটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা সিনেটে পাস হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সিনেটের অনুমোদন পেলেই এটি আইনে পরিণত হবে।
স্পেনে ইচ্ছামৃত্যুর বিল পাস করানো অবশ্য খুব সহজে হয়নি। রোমান ক্যাথোলিকদের দেশে বাধা এসেছে অনেক।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন। কেননা, এ দিনটিতেই নিম্নকক্ষে ইচ্ছামৃত্যু সংক্রান্ত বিলের ওপর ভোটাভুটি হয়। ১৯৮-১৩৮ ভোটে জয় হয় ইচ্ছামৃত্যু বা ইউথেনেশিয়ার। অর্থাৎ, গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগী ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাতে পারবেন। চিকিৎসকরা সম্মত হলে ইচ্ছামৃত্যুর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
স্পেনে ২০১৯ সালে এ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, দেশের সিংহভাগ মানুষ ইচ্ছামৃত্যুর পক্ষে। তবে বিরোধিতাও ছিল। দেশের কনজারভেটিভ পার্টি এবং অতি দক্ষিণপন্থী দল এই বিলের চরম বিরোধিতা করেছে। তাদের বক্তব্য, খ্রিস্টান ধর্মের প্রথা অনুযায়ী এমন আইন মেনে নেওয়া যায় না। ধর্ম আত্মহত্যাকে সমর্থন করে না।
বামপন্থী এবং মধ্য দক্ষিণপন্থীরা অবশ্য এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, যে ব্যক্তির চিকিৎসা আর সম্ভব নয়, যিনি অসুখে তীব্র কষ্ট পাচ্ছেন, তার ইচ্ছামৃত্যু বেছে নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।
পার্লামেন্টে যখন বিলটির ওপর ভোট হচ্ছে, তখন কিছু মানুষ বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। খুলির ছবি দেওয়া ব্যানার হাতে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, এভাবে ধর্মকে অমান্য করে আত্মহত্যাকে বৈধতা দেওয়া অনুচিত।
ইচ্ছামৃত্যুর আইন অবশ্য যথেষ্ট জটিল। রোগীকে বিভিন্ন পর্যায়ে চার বার ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন করতে হবে। প্রথম দুই বার লিখিত আবেদন করতে হবে। এরপর চিকিৎসকরা বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। তারপর আরও দুইবার আবেদন জানাতে হবে। আবেদনের যে কোনও পর্বে চিকিৎসকরা মত বদলাতে পারবেন। শুধু তাই নয়, কোনও চিকিৎসক যদি এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না চান, তা হলে তাকে বাধ্য করা যাবে না। ধর্মীয় ভাবাবেগে যাতে কোনোভাবেই আঘাত না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি আবেদনকারীকে স্পেনের নাগরিক হতে হবে। অন্য দেশের মানুষ স্পেনে গিয়ে ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাতে পারবেন না। সূত্র-ডিডব্লিউ।